একি বেদনার উঠিয়াছে ঢেউ দূর সিন্ধু পারে
নিশীথ-অন্ধকারে।
পূরবের রবি ডুবিল গভীর বাদল-অশ্রু-ধারে
নিশীথ-অন্ধকারে।।
ঘিরিয়াছে দিক ঘন ঘোর মেঘে,
পুবালী বাতাস বহিছে বেগে,
বন্দিনী মাতা একাকিনী জেগে’ কাঁদিতেছে কারাগারে,
শিয়রের দীপ যত সে জ্বালায় নিভে যায় বারে বারে।
নিশীথ-অন্ধকারে।।
মুয়াজ্জিনের কণ্ঠ নীরব আজিকে মিনার-চূড়ে,
বহে না শিরাজ-বাগের নহর, বুলবুল গেছে উড়ে’।
ছিল শুধু চাঁদ, গেছে তরবার,
সে চাঁদও আঁধারে ডুবিল এবার,
শিরতাজ-হারা কাঁদে মুসলিম আস্ত-তোরণ-দ্বারে।
উঠিতেছে সুর বিদায়-বিদুর পারাবার পরপারে।
নিশীথ-অন্ধকারে।।
ছিল না সে রাজা-কেঁপেছে বিশ্ব তবু গো প্রতাপে তার,
শত্রুদুর্গে বন্দী থাকিয়া খোলেনি সে তরবার।
ছিল এ ভারত তারি পথ চাহি’,
বুকে বুকে ছিল তারি বাদশাহী,
ছিল তার তরে ধুলার তখত মানুষের দরবারে।
আজি বরষায় তারি তরবার ঝলসিছে বারে বার।
নিশীথ-অন্ধকারে।।*
*এ গীতি-কবিতা সৈয়দ আমীর আলীর স্মৃতির উদ্দেশে নিবেদিত।
এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান